সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইসলামবিদ্বেষী পোস্ট বা মন্তব্যের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু দেশে চাকরি খোয়াতে হয়েছে অনেক প্রবাসী ভারতীয়কে।

এ বার একই রকম ঘটনা ঘটেছে কানাডায়ও। ইসলাম ধর্মবিরোধী পোস্ট দিয়ে রবি হুড়া নামে এক ভারতীয় যুবক চাকরি হারিয়েছেন। তিনি রিয়েল এস্টেট এজেন্ট হিসেবে যে সংস্থায় চাকরি করতেন, তার এই বর্ণবাদী আচরণের জন্য সেখান থেকে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

কানাডার একটি স্কুলের পরিচালনা বোর্ডেও ছিলেন তিনি। কর্তৃপক্ষ সেখান থেকেও রবি হুড়াকে সরিয়ে দিয়েছে।

কানাডায় এত দিন শব্দদূষণ আইনে শুধুমাত্র গির্জার ঘণ্টা বাজানোয় ছাড় ছিল। সম্প্রতি সেটা পরিবর্তন করে তার সঙ্গে ইসলামসহ সব ধর্মকেই যোগ করা হয়।

তাতে বলা হয়েছে, এখন থেকে শব্দবিধি মেনে আজান দেয়া যাবে। ব্রাম্পটনের মেয়র প্যাট্রিক ব্রাউন টুইটারে লেখেন, ১৯৮৪ সালে চালু হওয়া শব্দবিধি অনুসারে গির্জার ঘণ্টা বাজানোয় ছাড় দেয়া ছিল। তার সঙ্গে এ বার নির্দিষ্ট সময় ও ডেসিবেলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে সব ধর্মকেই এই রকম ছাড় দেয়া হচ্ছে।

মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন মসজিদে আজান দিতে পারবেন। কারণ, আমরা এখন ২০২০ সালে বসবাস করছি এবং সব ধর্মকেই সমান ভাবে মর্যাদা দেয়া উচিত।

এর পরই রবি হুড়া ওই সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করে একটি টুইট করেন। এতে তিনি লিখেছিলেন, এর পর কী? এ বার কি উটের পিঠে এবং ছাগলের পিঠে চড়া সওয়ারিদের জন্য রাস্তায় আলাদা লেন হবে? ঈশ্বরকে উৎসর্গ করার নামে ঘরে ঘরে পশুবলির অনুমতি দেয়া হবে? সব মহিলাকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকে রাস্তায় বেরোতে হবে?

মুসলিম সম্প্রদায়ের ভোটের জন্যই আজানে ছাড় দেওয়া হয়েছে বলেও লিখেছিলেন রবি। যদিও পরে নানা মহলে তীব্র বিতর্ক তৈরি হওয়ায় ওই টুইট তিনি মুছে দেন তিনি।

কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। রমজান মাসে এমন মন্তব্যে চটেছে ইসলামপন্থী বহু সংগঠন। রবি হুড়ার ওই টুইটের স্ক্রিন শট নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু করেছেন অনেকেই।

‘কানাডিয়ান অ্যান্টি হেট নেটওয়ার্ক’ নামে একটি টুইটার হ্যান্ডলে রবি হুড়ার নিন্দা করা হয়েছে এবং কানাডার ওই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে।

রবি হুড়া চাকরি করতেন ‘আরই/ম্যাক্স কানাডা’ নামে একটি রিয়েল এস্টেট সংস্থায়। সেখান থেকে তাকে বরখাস্ত করে সংস্থার পক্ষ থেকে টুইটারে লেখা হয়েছে, আমরা রবি হুড়ার মতামত সমর্থন করি না। তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং আমাদের সংস্থার সঙ্গে আর কোনও ভাবেই তিনি আর যুক্ত নন। বহুধর্ম ও বৈচিত্র্য আমদের সমাজের অন্যতম একটি ভালো দিক। আমরা সব সময় সেটা ধরে রাখার চেষ্টা করি।

কানাডার ম্যাকভিলে পাবলিক স্কুলের পরিচালনা বোর্ডেও ছিলেন রবি। সেই স্কুলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রিন্সিপ্যাল তদন্ত করেছেন। ওই ব্যক্তিকে (রবি হুড়া) পরিচালনা বোর্ড থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তিনি বোর্ডের কোনও বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন না। তার ইসলামবিরোধিতা মেনে নেয়া যায় না এবং তা আমাদের স্কুলের নীতিবিরোধী।