‘ইতিকাফ’ আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো অবস্থান করা, আবদ্ধ করা বা আবদ্ধ রাখা। ইসলামি পরিভাষায় ইতিকাফ হলো ইবাদতের উদ্দেশ্যে ইতিকাফের নিয়তে নিজেকে নির্দিষ্ট জায়গায় নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আবদ্ধ রাখা। যিনি ইতিকাফ করেন, তাঁকে ‘মুতাকিফ’ বলে।

মাহে রমজানের শেষ দশ দিন মসজিদে অবস্থান করা বা ইতিকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদায়ে কিফায়া। আরবি ইতিকাফ শব্দের আভিধানিক অর্থ অবস্থান করা, স্থির থাকা, কোনো স্থানে আটকে পড়া বা আবদ্ধ হয়ে থাকা। ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় রমজান মাসের শেষ দশ দিন অথবা অন্য কোনো দিন জাগতিক কাজকর্ম ও পরিবার-পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ইবাদতের নিয়তে মসজিদে বা ঘরে নামাজের স্থানে অবস্থান করা ও স্থির থাকাকে ইতিকাফ বলে।

ইতিকাফ করার মূল উদ্দেশ্য হলো, মসজিদে বসে আল্লাহর আনুগত্য করা এবং সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহ লাভ, সওয়াব অর্জন ও লাইলাতুল কদর লাভ করার আশা করা। আর এজন্য প্রত্যেক ইতিকাফকারীর আল্লাহর জিকির, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, নামাজ-রোজা, জিকির-আজকার, দোয়া-দরুদ, মোরাকাবা-মোশাহেদা ও অন্যান্য ইবাদতে ব্যস্ত থাকা এবং পার্থিব বিষয়ে কথাবার্তা ও আলাপ-আলোচনা থেকে দূরে থাকা আবশ্যক।

নবী করিম (স) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের শেষ দশ দিন ইতিকাফ করবে, তার জন্য দুই হজ ও দুই ওমরার সওয়াব রয়েছে।’ (বায়হাকী) ইতিকাফের ফজিলত সম্পর্কে অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একদিনের ইতিকাফ করল, আল্লাহ পাক তার ও দোজখের মধ্যখানে এমন তিনটি পরিখা তৈরি করে দেবেন, যার একটি থেকে অপরটির দূরত্ব হবে পূর্ব ও পশ্চিমেরও বেশি।’ (তিরমিযি ও বায়হাকী)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে, ব্যক্তিগত সকল কাজকে অব্যাহতি দিয়ে, মহান আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের আশায় যথাযথভাবে ইতিকাফ করার তাওফিক দান করুন। আমীন!

খতীবে বাঙ্গাল আল্লামা জুনায়েদ আল হাবিব
সহ-সভাপতি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল, জামেয়া কাসেমিয়া আশরাফুল উলুম ঢাকা।