জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহসভাপতি, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্মমহাসচিব, আন্তর্জাতিক ইসলামী ব্যক্তিত্ব ও মুফাসসিরে কুরআন, খতীবে বাঙ্গাল আল্লামা জুনায়েদ আল হাবীব বলেছেন, নারীদের হিজাবের অংশ হাত মোজা, পা মোজা, নেকাব নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে এদেশের মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত হেনেছে। প্রধানমন্ত্রীকে অবিলম্বে এই বক্তব্য প্রত্যাহার এবং মহান আল্লাহর দরবারে তাওবা করার আহ্বান জানাচ্ছি।
গতকাল (১৫ জুন) বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে খতীবে বাঙ্গাল আরো বলেছেন, গত ৯ জুন রবিবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মুসলিম নারীদের পর্দা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “হাত মোজা, পা মোজা, নাক-চোখ ঢেকে একেবারে জীবন্ত টেন্ট (তাঁবু) হয়ে ঘুরে বেড়ানো, এটা কি? এটার তো কোন মানে হয় না”। এই বক্তব্য ইসলামী শরীয়ত অবমাননাকর ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত হানার শামিল।
তিনি বলেন, এই বক্তব্যে ইসলামের অপরিহার্য বিধান ও আল্লাহর হুকুম পর্দাকে কটাক্ষ ও ব্যঙ্গ করা হয়েছে। ৯২% মুসলিম অধ্যুষিত দেশের প্রধানমন্ত্রীর মুখে এমন মন্তব্য শুনে মুসলমানরা হতবাক ও স্তম্ভিত হয়ে পড়েছেন। এই বক্তব্যের ফলে পর্দা নিয়ে ইসলামবিদ্বেষীদের ধর্মপ্রাণ মুসলিম নারীদেরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও হেয়প্রতিপন্ন করতে নতুনভাবে উৎসাহিত এবং পর্দানশীন নারীদের চলাচলে হয়রানী ও হেনস্থা বেড়ে যাওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, যে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই বক্তব্য দিয়েছেন, সে প্রশ্নের মধ্যেই এমন উত্তর প্রত্যাশার ইঙ্গিত ছিল। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের বাক্যে “এদেশের একটি মৌলবাদী গোষ্টি” বলে সম্বোধন করা ছিল। খতীব বাঙ্গাল প্রশ্নকারী সাংবাদিকেরও কঠোর সমালোচনা করেন।
খতীবে বাঙ্গাল বলেন, দেশের একজন প্রধানমন্ত্রী হয়ে ধর্মীয় প্রশ্ন ছাড়াও নাগরিকদের স্বাভাবিক জীবনাচার নিয়েও কোনরকম কটাক্ষ ও তুচ্ছতাচ্ছিল্যপূর্ণ বক্তব্য উনার মুখে মানায় না। তাঁর এই বক্তব্য সংবিধান, মানবাধিকার ও নাগরিক অধিকারবিরোধী।
আল্লামা জুনায়েদ আল-হাবীব আরো বলেন, দেশের বিদ্যমান সংবিধানে প্রতিটি নাগরিকের পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। একজন মুসলিম নারীর ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অধিকার হল নিরাপদে, স্বাচ্ছন্দে পর্দার বিধান প্রতিপালন করে চলাচল করা। এটাকে কটাক্ষ করার কোন অধিকার কারোর নেই।
হেফাজত যুগ্মমহাসচিব পবিত্র কুরআনের পর্দার বিধানের প্রতি অবমাননাকর এই মন্তব্য প্রত্যাহারপূর্বক মহান আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা ও সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতার কাছে দুঃখ প্রাকাশের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রির প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
-বিজ্ঞপ্তি।