যুদ্ধাপরাধ মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তি চেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জিহাদুল ইসলাম। এ ঘটনার পর জেলা ছাত্রলীগ জিহাদুলকে বহিস্কারের সুপারিশ করেছে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে।
জিহাদুল ইসলাম (২৭) ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার বোয়ালমারী ইউনিয়নের সোতাশী গ্রামের আব্দুর রহমান মোল্লার ছেলে। তিনি বর্তমানে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আইন কলেজে অধ্যয়নরত। এর আগে তিনি সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ছাত্র ছিলেন।
গত ২ এপ্রিল ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিশান মাহমুদ শামীম ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের যৌথ স্বাক্ষরিত একটি আবেদন পাঠানো হয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে। এতে জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জিহাদুল ইসলামকে দল থেকে বহিস্কারের সুপারিশ করা হয়।
দলীয় প্যাডে দেওয়া ওই সুপারিশপত্রে বলা হয়েছে, জিহাদুল ইসলাম গত ২৯ মার্চ জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর কারামুক্তি চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেন, যা ছাত্রলীগের নীতি, আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি। কুখ্যাত রাজাকার সাঈদীর পক্ষে কথা বলে জিহাদুল ছাত্রলীগের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কাজ করেছেন। যে কারণে তার ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকা আমাদের জন্য লজ্জাজনক।
‘আমি চার বছর ধরে জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি, আমি সন্ত্রাসী বা চাঁদাবাজ নই’ আত্মপক্ষ সমর্থন করে জিহাদুল ইসলাম বলেন, রাজনীতি করতে হলে অনেক শত্রু থাকে। কে বা কারা আমাকে হেয় ও অসম্মানিত এবং রাজনৈতিকভাবে মৃত্যু ঘটানোর জন্য আমার ছবি ব্যবহার করে আমার নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে এ কাজটি করতে পারেন। তিনি বলেন, একজন পাগলও তার স্বার্থ বোঝে, আমি পাগল নই যে এ জাতীয় স্ট্যাটাস দেব। তিনি বলেন, এ কথা ভেবে কষ্ট হচ্ছে যে, বিষয়টির কোনো রকম তদন্ত না করে জেলা ছাত্রলীগ এ জাতীয় একটি সুপারিশপত্র কেন্দ্রে পাঠিয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিশান মাহমুদ শামীম বলেন, জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জিহাদুল ইসলাম তার নামের ফেসবুক পেজ থেকে জামায়াত নেতা সাঈদীর কারামুক্তির দাবি করেন। বিষয়টি নজরে এলে গত বৃহস্পতিবার রাতে জরুরি সভা করে জিহাদুলকে ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কার করার সুপারিশ করে পত্র পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির কাছে।