সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনে পর্দা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য “হাত মোজা, পা মোজা, নাক-চোখ ঢেকে, একেবারে, এটা কী? জীবন্ত ট্যান্ট (তাঁবু) হয়ে ঘুরে বেড়ানো; এর তো কোনো মানে হয় না” পর্দা বিধানের সঙ্গে উপহাসের শামিল। এতে পর্দাবিদ্বেষীরা উৎসাহিত হবে এবং পর্দাবিরোধীতা বৃদ্ধি পাবে।

এমনিতেই ইসলামবিদ্বেষীরা বোরকা ও হিজাব নিয়ে কটুক্তি করার দুঃসাহস দেখিয়েছে নানা সময়, নানা স্কুল কলেজে বোরকা ও হিজাব পরিহিতা ছাত্রীদের হেনস্তা করা হয়েছে, হিজাবধারীকে শ্রেণিকক্ষ থেকে বের করে দেয়ার মত ঘটনাও ঘটেছে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে। এখন উগ্রবাদী ওই গোষ্ঠীটি আগের চেয়ে বেশি হিংস্রতা দেখাবে। আতঙ্কে থাকতে হবে পর্দানশীন নারী শিক্ষার্থীদেরকে। অথচ সংবিধান দেশের প্রত্যেকটা নাগরিককে স্বাধীনভাবে তার ধর্ম-কর্ম পালনের অধিকার দিয়েছে।

আমাদের মনে রাখতে হবে পর্দা একটি ফরজ বিধান। এ বিধান কীভাবে পালন করতে হবে এ বিষয়ে কোরআন সুন্নায় সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে। যুগে যুগে নবীগণ এ নির্দেশনা জাতিকে বাতলে দিয়েছেন। কোন ব্যক্তির পছন্দ-অপছন্দের বিষয় নয় এটি। পবিত্র কোরআন কারীমে ইরশাদ হচ্ছে-

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن جَلَابِيبِهِنَّ ۚ ذَٰلِكَ أَدْنَىٰ أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ ۗ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا.

হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীগণ ও কন্যাদেরকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। (সূরা আহযাব-৫৯)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে-

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِّنَ النِّسَاءِ ۚ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَّعْرُوفًا.

হে নবী পত্নীগণ, তোমরা অন্য নারীদের মত নও। যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পরপুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষনীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না। ফলে সেই ব্যক্তি কু-বাসনা করে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে। তোমরা সঙ্গত কথাবার্তা বলবে। (সুরা আহযাব- ৩২)

এ দুটি আয়াতে পর্দার বিধান, পর্দা করার পদ্ধতি ও পর্দার তাৎপর্য সম্পর্কে স্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি আয়াত ও অসংখ্য হাদীসে পর্দার নির্দেশনা রয়েছে।

চাদর বা বড় ওড়না দিয়ে চেহারা সহ পুরো শরীর ঢেকে রাখা সম্ভব কিন্তু কষ্টকর। তাই নারীরা বোরকা, নিকাব, হাত মোজা, পা মোজা পরিধান করে। এতে তারা চলাচলে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এভাবেই যুগে যুগে মুসলিম নারীরা পর্দার বিধান পালন করে আসছে এবং যুগে যুগে ওলামায়ে কেরাম এভাবেই পর্দা করার পদ্ধতি ও পন্থা বাতলে দিয়েছেন। বর্তমান সময়েরও প্রায় সকল ওলামায়ে কেরাম চেহারাকে পর্দার অন্তর্ভুক্ত মনে করেন এবং চেহারা ঢেকে রাখার নির্দেশ দেন।

jomjom