ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা হালিম বলেছেন, ‘আমরা ছাত্রনেতা, নিয়োগ বাণিজ্য করতেই পারি, শিক্ষকরা কেন করবে?’
শনিবার (২৯ জুন) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ক্যাম্পাসে মিছিল বের করে। পরে তারা উপাচার্যের অফিসে নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িতদের ও মূলহোতার শাস্তির দাবি জানায়।
উপাচার্যের কাছে নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাতে গিয়ে জুয়েল রানা হালিম বলেন, ‘আমরা ছাত্রনেতা, নিয়োগ বাণিজ্য করতেই পারি, শিক্ষকরা কেন করবে?
এর জবাবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন, ‘তোমরা নিয়োগ বাণিজ্য করতেই পারো, তা আমি মানলাম না।’
পরে হালিম বলেন, ‘আমি এটা বললাম কোন পারপাসে, আপনারাই বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে যত শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে সমস্ত শিক্ষক আমরাই নিয়োগ দিয়েছি।’
পাশে আরেক ছাত্রলীগ কর্মী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই যখন জড়িত থাকে তখন স্টুডেন্টরা কি করবে?’
অন্য ছাত্রলীগ কর্মীরা বলেন, ‘পত্রিকায় নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে কয়েকজন শিক্ষকের নাম প্রকাশ হয়েছে সেখানে মাত্র দুজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে, মূলহোতাদেরও বরখাস্ত করতে হবে।’
সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, ‘আপনি শোভন ভাইয়ের কাছে আমাদের বিরুদ্ধে কি উদ্ভট অভিযোগ করেছেন সেই জন্য ইবি ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করা হয়েছে।’
সা. সম্পাদক জুয়েল রানা হালিম বলেন, ‘যতবার আমরা কমিটির বিষয়ে কথা বলছি ততবার আপনার (উপাচার্য) নাম উঠে আসছে।’
উপাচার্য বলেন, ‘আমি কখনো ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে ডিল করিনি, ছাত্রলীগের কমিটিতে কে বা কারা আসবে।’
শাহিন বলেন, ‘আপনি আমাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন, শোভন ভাই বলেছেন।’
উপাচার্য এর উত্তরে বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি আমাকে লিখিত অভিযোগ দেখাতে পারবেনা।’
২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবরে ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করার পর থেকে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কোনও কার্যক্রম দেখা যায়নি। এমনকি শুক্রবার (২৮ জুন) সভাপতির কর্মীদের মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটে এতে নূর আলম আহত হয়ে মেডিকেলে চিকিৎসা নেন। এ বিষয়ে সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি এক পত্রিকার প্রতিনিধিকে দেয়া বক্তব্যে বলেন, ‘বর্তমান কমিটির কার্যক্রম স্থগিত। আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।’
আগেরদিন মারামারির ঘটনায় কমিটি স্থগিতের কথা বলে তিনি কোন বক্তব্য দেননি তবে আজ শনিবার হঠাৎ নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে ক্যাম্পাসে মিছিল বের করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন, ‘ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে এক প্রার্থীকে চাকরি নিয়ে দেয়ার যে অডিও ফাঁস হয়েছে তা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদেরকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে সিন্ডিকেটে এ ঘটনা কেন ঘটেছে ও এর সাথে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। প্রতিবেদন সাপেক্ষে সর্বোচ্চ, কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
ব্রেকিংনিউজ/এমএইচকে/জেআই